
প্রকাশিত: Sun, Jan 15, 2023 2:37 PM আপডেট: Mon, May 12, 2025 8:32 AM
মানুষ অপশাসনকে নিজের সম্মানের জন্য হানিকর মনে করে
মাহবুব মোর্শেদ
পরাক্রমশালী রাজার সামনে গেলে আপনাকে নত হতে হবে। আপনি যদি তার সামনে কোনোভাবে দুর্বিনীত আচরণ প্রদর্শন করেন তবে আপনাকে শাস্তি পেতে হবে। আপনি প্রশ্ন করতে পারেন, রাজার সামনে গিয়ে আমি নতও হবো না, দুর্বিনীতও হবো না। আমার আচরণ হবে স্বাভাবিক। কিন্তু রাজার সামনে নিরপেক্ষ কোনো আচরণ করার সুযোগ নেই। রাজার সামনে গিয়ে আপনি যদি কুর্নিশ না করেন তবে ধরে নেওয়া হবে আপনি যথাযথ আচরণ করেননি। ফলে আপনি দুর্বিনীত। ধরা যাক আপনি দুর্বিনীত আচরণ করতে চান না। রাজার যা প্রাপ্য তাকে তা দিতে চান। ফলে রাজাকে আপনি কুর্নিশ করবেন। যেহেতু রাজা শাসক এবং প্রজা হিসেবে আপনার এই আচরণই প্রত্যাশিত। রাজাকে প্রাপ্য সম্মান দিলে আপনি সামন্তকে প্রাপ্য সম্মান দেবেন। সেনাপতিকে প্রাপ্য সম্মান দেবেন। রাজকর্মচারীদের প্রাপ্য সম্মান দেবেন। এক্ষেত্রে প্রজা হিসেবে একটা শান্তিপূর্ণ জীবন আপনার প্রাপ্য। রাজ্যে যারা বড় তাদের আপনি বড় জায়গায় রাখবেন ফলে তারাও আপনাকে নিরাপদে থাকতে দেবে। বণিকদের সম্মান করলে তারা আপনাকে মর্যাদা দেবে। রাজ কবিদের সম্মান দিলে তারা আপনাকে স্নেহ দেবে। এতে আশ্চর্যের কিছু নেই। পৃথিবীতে সকলেই জানে, আপনি যদি যার যা প্রাপ্য তা তাকে দেন এবং আপনার মধ্যে উচ্চপদস্থদের সঙ্গে বিরোধ ও সংঘর্ষের কোনো নজির না দেখা যায় তবে আপনি শান্তিতেই থাকবেন। আবার আপনার চেয়ে নিচের দিকে যারা আছে তাদেরও আপনি তোয়াজ করে চলবেন। কেননা তারা আপনাকে চেনে না। তাদের সঙ্গে এলোমেলো আচরণ করলে তারা আপনাকে অপমান করতে পারে। ফলে তাদেরও আপনি ঘাঁটাবেন না।
কিন্তু এতে করে আপনি নীরস নিরপদ্রুব, পানসে একজন ব্যক্তিতে পরিণত হবেন। লাখ লাখ প্রজার সঙ্গে আপনার আর কোনো পার্থক্য থাকবে না। তখন আপনি ক্ষমতা ও শক্তিতে যারা আপনার সমান তাদের সঙ্গে লড়তে চাইবেন। কারণ, তারা আর যাই হোক রাজা, সামন্ত, বণিক, রাজকবিদের মতো আপনাকে শায়েস্তা করতে আসবে না। আপনার নিজে যারা আছে তাদের মতো আপনাকে আক্রমণও করতে আসবে না। ফলে, আশপাশের লোকজনের বিরুদ্ধে আপনি জোরদার যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারবেন। রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধের কথা বললে আপনি বলবেন রাজদ্রোহী হওয়ার পাপ। বণিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কথা বললে আপনি বলবেন, তাহলে পণ্য সরবরাহ ঠিক থাকবে কীভাবে। রাজ কবিদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে আপনি বলবেন, এরা তো সম্মানিত ব্যক্তি। মানীর বিরুদ্ধে কিভাবে কথা বলি।
কিন্তু দেখেন, যুগে যুগে ক্ষমতাশীলদের বিরুদ্ধে মানুষ কথা বলে আসছে। নিজেদের শান্তি, স্বস্তি ও জানমালের বিঘ্ন ঘটিয়ে তারা এমনকি বিদ্রোহ করে আসছে। কেন তারা এটা করে? আমি বলবো, আত্মসম্মানের জন্য মূলত করে। মানুষ অপশাসনকে নিজের সম্মানের জন্য হানিকর মনে করে। অপরের অপমানকে নিজের জন্য হানিকর মনে করে। অপরের ওপর নেমে আসা নিপীড়ন নির্যাতনকে নিজের জন্য হানিকর মনে করে। গণতন্ত্র মানবাধিকার সহ নানা কিছু অতিসাম্প্রতিক বিষয়। কিন্তু যে জিনিসটি মানুষকে অপ্রতিরোধ্য করে মানুষের সভ্যতাকে গড়ে দিয়েছে তার নাম আত্মসম্মান। কে না জানে, যারা আত্মসম্মান বিকিয়ে দিয়ে টিকে থাকে, তারা অত্যন্ত চালাক। সমাজে ধন, মান, খ্যাতি, প্রতিপত্তি সবই তাদের হয়। মূলত তারাই বিজয়ী। আর আত্মসম্মান আঁকড়ে ধরে যারা বিদ্রোহী হিসেবে তারা কিছুই পায় না। কিন্তু এই গরুগুলোই পরিবর্তন আনে। ফলে, আপনি গরুগুলোকে যতই গরু বলবেন তাদের বোধহয় হবে না। কারণ তারা তো আসলেই গরু। চালাক মানুষ হলে সুড়সুড় করে গিয়ে ক্ষমতাধরদের কুর্নিশ করে বসতো। লেখক ও সাংবাদিক। ফেসবুক থেকে
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
